Header Ads

মাসিক অনিয়ম বা মেনস্ট্রুয়াল ইরেগুলারিটিজ (Menstrual Irregularities) কেন হয় এর লক্ষণ ও প্রতিকার জানুন

 

মাসিক অনিয়ম

মাসিক অনিয়ম বা মেনস্ট্রুয়াল ইরেগুলারিটিজ (Menstrual Irregularities) কেন হয়

মাসিক অনিয়ম বা মেনস্ট্রুয়াল ইরেগুলারিটিজ (Menstrual Irregularities) হল একটি শারীরিক সমস্যা যেখানে নারীদের মাসিক চক্রে কোনোরকম অনিয়ম ঘটে। এটি বেশ সাধারণ এবং বিভিন্ন কারণে হতে পারে। মাসিক চক্র সাধারণত ২১ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে থাকে, এবং এটির ব্যত্যয় হলে তাকে অনিয়মিত বলে ধরা হয়।

মাসিক অনিয়মের কারণ:

১. হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের ভারসাম্যহীনতা মাসিক চক্রের অনিয়ম সৃষ্টি করে।
২. পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (PCOS): এটি একটি হরমোনজনিত সমস্যা, যা মাসিক অনিয়মের অন্যতম কারণ।
৩. থাইরয়েড সমস্যা: হাইপারথাইরয়েডিজম বা হাইপোথাইরয়েডিজম মাসিক চক্রের অনিয়ম ঘটাতে পারে।
৪. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা মাসিক চক্রের ব্যত্যয় ঘটাতে পারে।
৫. ওজন পরিবর্তন: দ্রুত ওজন কমানো বা বাড়ানো মাসিক অনিয়মের কারণ হতে পারে।
৬. জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি: এই ধরনের বড়ি গ্রহণের ফলে কখনও কখনও মাসিক চক্র অনিয়মিত হতে পারে।
৭. অতিরিক্ত ব্যায়াম: অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম হরমোনের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে, যার ফলে মাসিক অনিয়মিত হয়।
৮. বয়স ও প্রজনন স্বাস্থ্য: কৈশোরকাল ও মেনোপজের সময় মাসিক চক্রে অনিয়ম দেখা যায়।

লক্ষণ:

১. অনিয়মিত চক্র: মাসিক চক্র স্বাভাবিক সময়ের আগে বা পরে শুরু হওয়া।
২. অত্যধিক রক্তপাত: মাসিকের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রক্তপাত হওয়া।
৩. রক্তপাতের স্থায়ীত্ব: স্বাভাবিকের চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে মাসিক হওয়া।
৪. ব্যথা ও ক্র্যাম্প: অত্যধিক ব্যথা বা ক্র্যাম্প মাসিক অনিয়মের লক্ষণ হতে পারে।
৫. মাঝে মাঝে রক্তপাত: মাসিক চক্রের মাঝখানে বা অনিয়মিত সময়ে রক্তপাত।

প্রতিকার ও চিকিৎসা:

১. হরমোন চিকিৎসা: হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হরমোন চিকিৎসা করা যেতে পারে।
2. ওজন নিয়ন্ত্রণ: সঠিক ডায়েট ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা প্রয়োজন।
৩. ওষুধের সঠিক ব্যবহার: জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বা অন্যান্য ওষুধের ব্যবহার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা উচিত এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেগুলি গ্রহণ করা উচিত।
৪. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং অন্যান্য রিলাক্সেশন টেকনিক মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
৫. PCOS চিকিৎসা: PCOS নির্ণয় হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হরমোন থেরাপি, ইনসুলিন সেনসিটাইজার বা জীবনধারা পরিবর্তন করা যেতে পারে।
৬. থাইরয়েড চিকিৎসা: থাইরয়েডের সমস্যার জন্য সঠিক চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।
৭. নিয়মিত ব্যায়াম: অতিরিক্ত ব্যায়াম এড়িয়ে মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম শরীরের হরমোন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়:

১. স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা: সঠিক পুষ্টি, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া মাসিক অনিয়ম প্রতিরোধে সহায়ক।
২. ডায়েট নিয়ন্ত্রণ: প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে হরমোন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩. হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা: নিয়মিত হেলথ চেকআপ এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হরমোনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার।
৪. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান ও যোগব্যায়াম প্রয়োগ করা যেতে পারে।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণ: স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা জরুরি।
৬. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানো।

মাসিক অনিয়ম একজন নারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। এটি দীর্ঘস্থায়ী হলে, অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

আরো দেখুন.

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.